বৃষ্টিতে বেড়াল।
( Inspired by Cat In The Rain by Ernest Hemingway )
আকাশ ভেঙে বৃষ্টি। শান্তিনিকেতন। তুমি জানালায়। গুনগুন। 'আমি তখন ছিলেন মগন' ।
নীচে গাড়িবারান্দা। পেরিয়ে শ্যাওলা দেয়াল। দূর থেকে দেখতে পেলে। ছোট্ট এক বেড়াল। আস্তানার খোঁজে।
বললে ' নিয়ে আসি। বড্ড ছোট। ভয়ে জরোসরো।' আমি বললাম ' আমি দেখছি। তুমি জানলা থেকে সরো।'
তুমি বললে ' না। আমি যাব। অনেক দিন বাদে না হয় বৃষ্টি ছোঁয়া পাব। তুমি ই ঘরে থাক।'
সিঁড়ি দিয়ে নামলে। সেই বৃদ্ধ কেয়ারটেকার। ' কোথায় যান। ম্যাডাম । বৃষ্টি । পিছল রাস্তা। ভিজে যাবেন। একটু থেমে যান' ।
কেয়ারটেকার ভালো মানুষ। একান্ত সজ্জ্বন। বিনয়ী, বুদ্ধিমান এবং বিচক্ষন।
শুনলে না। বেড়িয়ে গেলে। ছাদের কার্নিশ। বৃষ্টি একটু ধরে এসেছে। হঠাৎ । ' দিদি, নিন।'
সাঁওতাল কালো মেয়ে। খুলে ধরে ছাতা। বুঝতে পারো। কেয়ারটেকার। বিচক্ষনতা।
দৌড়ে গেলে। কাদা ভেঙে। কোথায় বেড়াল ছানা ? এদিক দেখো । ওদিক দেখো । কোথাও পেলে না।
সাঁওতাল মেয়ে । ' ফিরে চলুন। বড্ড অন্ধকার। সাপ আছে। বেড়াল ঠিক পৌঁছে যাবে নিজের ঠিকানায়।'
ঘরে এলে। কালো মুখ। চোখের পাতা ভারী। ড্রেসিং টেবিল। চিরুনি নিলে। বসলে আড়াআড়ি।
'ভাবছি এবার চুল রাখব। লম্বা বিনুনি। খোঁপা করব। ফিতে বাঁধব। হলদে। বেগুনী। কেমন হবে?'
আমি বললাম। খাটের থেকে। ' কেন ?এই তো বেশ। ছোট চুল। ঝামেলা কম। কদম্ব-ছাঁট কেশ !' হাসলাম।
' নাঃ। কেমন পুরুষ পুরুষ লাগে। লম্বা চুল। কাঁধে ঢল। ওটাই ভালো লাগে। চুলই নারীর শোভা।
তার সাথে। বেড়াল পুষব। আমার পোষা মেনি। বহুদিনের শখ এটা। তোমায় বলি নি। আজ বললাম। '
আমি বললাম। ' কি মুস্কিল। বেড়াল আবার কেন? এমনিতেই জায়গা কম। তার ওপরে যত। '
দরজায় আলতো টোকা। ' দিদি, খুলবেন? ' বিছানা ছেড়ে। দরজা খুলি। সাঁওতাল মেয়ে।
কোলে মুস্কো এক বেড়াল।
হাত বাড়িয়ে বলল মেয়ে । ' দিদি, কেয়ারটেকার মামা '
ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি এল। বাজল দামামা।
ড্রেসিং টেবিল। আয়না ফিতে।
ইতি অশথ্বামা।
No comments:
Post a Comment