One Reader Writes by Ernest Hemingway ভাবালম্বনে।
চিঠি।
ডিব্রুগড়। ১৯৪৫। ডিসেম্বর মাস।
ভোর চারটে। ঝিরিঝিরি বৃষ্টি। বাড়িটা রাস্তার শেষ প্রান্তর। লাল টালির ছাদ। ওটা গোগোই বাড়ি।
পূর্ণিমা আজ দ্বিধান্বিত। চিঠিটা লেখা নিয়ে।
সারা রাত ভেবেছে পূর্ণিমা। কাগজের ছবিটাতে তো বেশ লাগল। মনে হয় ধীরমতি। বিশ্বাসযাগ্য। পুরু চশমা। জ্ঞানের স্পষ্ট চিহ্ন।
ভরসা করা যায়। ডা: ভূপেন ফুকন।
ভোর চারটে। পূর্ণিমা লেখা শুরু করে। সাদা কাগজ। নীল কালি।
'' মাননীয় ডাক্তারবাবু,
আমাকে আপনি চিনবেন না। নিতান্ত গৃহবধূ। নামটা লিখলাম না। একান্ত বিপদে পড়ে আপনাকে লিখছি, ডাক্তারবাবু।
দেখা করতে পারতাম। করলাম না। জানি না সামনা সামনি ঠিক কতটা বুঝিয়ে বলতে পারতাম আপনাকে। তাই এই চিঠি।
আমার স্বামী। মিলিটারিতে সেপাই। বছর চারেক বিয়ে হয়েছে আমাদের। সম্পর্ক ভালো।
বছর দেড়েক আগে। বর্মায় যুদ্ধে যায়। ফিরে এসেছে। এক মাস। প্রথমে আমার কাছেই আসে। বাপের বাড়িতে। আমার বাপের বাড়িতে। ডিব্রুগড়ে। তারপর ফিরে যায়। জোরহাট। আমার শ্বশুরবাড়ি।
গত পরশু গিয়েছিলাম। ওর কাছে। গিয়ে দেখি। খুব চঞ্চল হয়ে আছে। আর রাত্রে। একটা ইন্জেকশন নিল, জানেন। জিজ্ঞেস করতে বলল ওর নাকি সিফিলিস হয়েছে। ডাক্তার বলেছে ওষুধ নিলে সেরে যাবে।
খুব ভয় পেয়েছি ডাক্তারবাবু। এ অসুখ সারে? বিয়ের আগে এক মামা বলেছিল সিফিলিস নাকি মারনরোগ। আরও কত কি বলেছিল। বাবাকে। আমি খাবার দিচ্ছিলাম। তাই শুনেছিলাম।
ডাক্তারবাবু, ও কি কোনোদিন ঠিক হবে? আমি জানি না কেন ওর এই অসুখ হোলো। কিভাবে হোলো। আমি শুধু জানি ও আমার স্বামী। বাকি টুকু অজানা থাক। ক্ষতি নেই।
ঈশ্বর ওর মঙ্গল করুক। ঈশ্বর ওকে সুস্থ করে তুলুক। ডাক্তারবাবু, আমাকে সত্যি করে বলুন ও ঠিক হবে তো? আমি কামাক্ষায় পূজো দিতে যাব কাল। যাতে ও তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়।
ও বলা হয়নি । আমাদের একটা ছেলে আছে। এক বছর বয়স। ওর কিছু হবে নাতো? আমি খুব চিন্তায় আছি এ' দুদিন।
উত্তর দেবেন। প্রার্থনা করি।
আমার প্রণাম নেবেন
ইতি
পূর্ণিমা গোগোই
৪/৩, এন বোরদোলই পথ
ডিব্রুগড়। ''
চিঠিটা আরেকবার পড়ে পূর্ণিমা। হেসে ফেলে। খামে ভরে।
No comments:
Post a Comment