ফেলে আসা দিন। আমার। তোমার। তোর। গড়পরতা বাঙ্গালীরা। আমাদের বাংলা। সত্তর- আশির।
রবিবার '৭০-৮০ ।।
সে ছিল মধুকাল, অন্তর্যামী,
আমি মানে কোলকাতা,
কোলকাতা আমি।
রবিবার। ঘুম ভাঙত। সেই লোডশেডিং। বাইরে তখন ছিটে- বৃষ্টি। জানলা-কাঁচে ফরিং।
গন্ধ পেতাম। লুচি আর সাদা চচ্চড়ি। বোন ডাকত। 'ওঠ না দাদা।' আমি 'ধুৎতোরি' ।
ব্যাগ নিয়ে। মাংস দোকান। লম্বা হোত লাইন। ভোলা দা। ' মেটে দিস। চর্বি দিস। এইই, ইসমাইল । '
বাড়ি এসে। ব্যাগ রেখে। আরেক কাপ চা। পাশের বাড়ি। মঞ্জরী। ' সা রে গা মা পা।'
বিছানায় আধ-শোয়া। আগাথা ক্রিস্টি। বাইরে তখন ঝম ঝমাঝম। তুমুল বৃষ্টি।
ঘরে তখন। অখিলবন্ধু কিংবা জগন্ময়। চোখের পাতা ভারী হোতো। নিদ্রা তন্ময়।
ঘুম ভাঙত। আলতো ছোঁয়া। 'আসুন, মহাশয়।' মাংস আর গরম ভাত। সুবাস ঘরময়।
উপচে পরা ভাত। মাংস জামবাটি। থালার পাশে পোস্ত বাটা। সর্ষে তেল খাঁটি।
ভাত খেয়ে। আবার ঘুম। এমন ছিল দিন। সঙ্গী হোতো। নির্মলেন্দু। আব্বাসউদ্দিন।
বিকেল মানে। পাড়ার মোড়। আড্ডা জবরদস্ত। ভোলা দার এক কথা। ' খুশ রহো। মস্ত্' ।
কেউ বলত ' চা, দে রে। ' কেউ বলত 'রাজা , বল না বাপ, আলুর চপ। গরম তেলে ভাজা' ।
রাজা-উজির খতম করে। কাটত সন্ধে বেশ। বাড়ি ফিরতাম। একে একে। আড্ডা শেষের রেশ।
মা বাবা আমি বোন। রাতে চাইনিজ। বোন বলত ' ও দাদাভাই, চিংড়ি-লেজ। প্লিইজ' ।
রাত হোতো। পেরিয়ে যেত। আরেক রবিবার। রাত মানে। কেবল তুমি। বেগম আখতার ।
সে ছিল মধুরাত, অন্তর্যামী,
আমি মানে ভালোবাসা,
ভালোবাসা আমি।।
No comments:
Post a Comment